![]() |
কম্পিউটার পরিভাষায় জেনারেশন প্রযুক্তির একটি পরিবর্তন যা কম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে, প্রজন্মের শব্দটি বিভিন্ন হার্ডওয়্যার প্রযুক্তির মধ্যে পার্থক্য করার জন্য ব্যবহৃত হয়। আজকাল, প্রজন্মের হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার উভয়ই রয়েছে যা একসঙ্গে একটি সম্পূর্ণ কম্পিউটার সিস্টেম তৈরি করে।
আজ পর্যন্ত পরিচিত পাঁচ কম্পিউটার প্রজন্মের আছে। প্রতিটি প্রজন্মের তাদের সময়কাল এবং বৈশিষ্ট্য বরাবর বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। নিচের টেবিলে, প্রতিটি প্রজন্মের আনুমানিক তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে, যা সাধারণত গৃহীত হয়।
প্রজন্ম ও বিবরণ- Computer Generation Chart
প্রথম প্রজন্ম
প্রথম প্রজন্মের সময়কাল: 1946-1959 ভ্যাকুয়াম টিউব।Vacuum tube
প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটার : ১৯৪৬ সাল থেকে ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত সময়কালকে কম্পিউটারের প্রথম প্রজন্ম বলে অনুমান করাহয়। প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটারগুলোয় ভ্যাকুয়াম টিউব ব্যবহার করা হতো অসংখ্য ডায়োড, ট্রায়োড ভালভ, রেজিস্টার, ক্যাপাসিটরইত্যাদি দিয়ে তৈরি হতো বলে প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটার ছিল আকৃতিতে বড় এবং স্বল্প-গতিসম্পন্ন। এ প্রজন্মের কম্পিউটারে বিদ্যুৎ খরচ বেশি হতো এবং প্রচুর তাপ উৎপন্ন হতো।
বৈশিষ্ট্যঃ
- ভ্যাকুয়াম টিউববিশিষ্ট ইলেকট্রনিক বর্তনীর ব্যবহার।
- চুম্বকীয় ড্রাম মেমরি।
- সীমিত ডেটা ধারণক্ষমতা।
- বিশাল আকৃতির ও সহজে বহন-অযোগ্য।
- পাঞ্চকার্ডের উপযোগী ইনপুট-আউটপুট সরঞ্জাম।
- রক্ষণাবেক্ষণ ও উত্তাপসমস্যা বড় অসুবিধা।
উদাহরণ: IBM 704, IBM 709
দ্বিতীয় প্রজন্ম
দ্বিতীয় প্রজন্মের সময়কাল: 1959-1965 ট্রানজিস্টর ।Transistor
বৈশিষ্ট্য:
- ট্রানজিস্টরের ব্যবহার।
- চুম্বকীয় কোর মেমরি।
- উচ্চগতিবিশিষ্ট ইনপুট-আউটপুট সরঞ্জাম।
- ফরট্রান ও কোবলসহ উচ্চতর ভাষার উদ্ভব।
- আকৃতির সংকোচন।
- তাপসমস্যার অবসান।
- গতি ও নির্ভরযোগ্যতার উন্নতি।
উদাহরণ: IBM 1400, IBM 1620
তৃতীয় প্রজন্ম
তৃতীয় প্রজন্মের সময়কাল: 1965-1971 ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট।
Integrated Circuit
তৃতীয় প্রজন্মের কম্পিউটার: ১৯৬৫ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সময়কালকে কম্পিউটারের তৃতীয় প্রজন্ম বলে মনে করা হয়।তৃতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারে ইনটিগ্রেটেড সার্কিট (আইসি) বা সমন্বিত চিপ থাকে, যাতে অনেক অর্ধপরিবাহী ডায়োড, ট্রানজিস্টর এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ থাকে। তৃতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারে বিদ্যুৎ খরচ কমে যায়, কাজের গতি ও নির্ভরশীলতা বহুগুণ বেড়ে যায়।
বৈশিষ্ট্য:
- ইনটিগ্রেটেড সার্কিটের ব্যবহার।
- সেমিকন্ডাক্টরের ব্যবহার।
- আকৃতির সংকোচন ও অধিক নির্ভরশীলতা।
- একই সময়ে একাধিক ব্যবহারকারীর ব্যবহারের সুবিধা।
- হাই লেভেল ল্যাঙ্গুয়েজের ব্যাপক প্রচলন।
- মনিটরের প্রচলন।
- মিনি কম্পিউটারের প্রচলন।
আউটপুট হিসেবে VDU (Video Display Unit) ও উচ্চগতির লাইন প্রিন্টারের প্রচলন শুরু হয়।
উদাহরণ: IBM 360, IBM 370
চতুর্থ প্রজন্ম
চতুর্থ প্রজন্মের সময়কাল: 1971-1980 -19 ভিএলএসআই মাইক্রোপ্রসেসর।
VLSI
চতুর্থ প্রজন্মের কম্পিউটার: ১৯৭১ সাল থেকে বর্তমান সময়কালকে কম্পিউটারের চতুর্থ প্রজন্ম বলে ধরা হয়। এই প্রজন্মেরকম্পিউটারে LSI (Large Scale Integration) ও VLSI (Very Large Scale Integration) প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি মাইক্রো প্রসেসরব্যবহার করা হয়।
বৈশিষ্ট্য:
- মাইক্রো প্রসেসরের উদ্ভব।
- দামের নিম্নগতি কিন্তু ক্ষমতা বেশি।
- সরাসরি প্রোগ্রাম প্যাকেজ প্রয়োগের সুবিধা।
- টেবিলের ওপর রেখে কাজ করার সুবিধা।
- সাধারণ মানুষের ব্যবহারের সুযোগ।
উদাহরণ: IBM 3033, IBM PC
পঞ্চম প্রজন্ম
পঞ্চম প্রজন্মের সময়কাল: 1980 এর পরে ইউএলএসআই মাইক্রোপ্রসেসর।
ULSI
পঞ্চম প্রজন্মের কম্পিউটার: ব্যবহারিক ক্ষেত্রে এখনো চতুর্থ প্রজন্মের কম্পিউটার প্রচলিত আছে। যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানে পঞ্চমপ্রজন্মের কম্পিউটার চালুর অব্যাহত প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। পঞ্চম প্রজন্মের কম্পিউটারগুলোয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence)প্রয়োগ করা হচ্ছে।
বৈশিষ্ট্য:
- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার।
- অধিক সমৃদ্ধশালী মাইক্রো প্রসেসরের ব্যবহার।
- বর্তনীগুলোয় অপটিক্যাল ফাইবারের ব্যবহার।
- কণ্ঠস্বরের মাধ্যমে প্রদত্ত নির্দেশের অনুধাবন।
- সুপার কম্পিউটারের উন্নয়ন।
- ডেটা ধারণক্ষমতার ব্যাপক উন্নতি।
Super VLSI (Very Large Scale Integration) চিপ অবতারণা করা হয়েছে।
KIPS (Knowledge Information Processing System) ব্যবহার করা হচ্ছে।
0 Comments